
এম এ কাদির চৌধুরী ফারহান:
ঘুঘু পাকি সকলের পরিচিত, এই পাখি গ্রামাঞ্চলেই বেশি দেখা যায়। লোকালয়ে বাস করলেও এরা আড়ালে থাকে। তবে গনমাধ্যম কর্মীদের চোখ তো আর আড়াল করা যায়না। তাদের নজরে ঠিক চলে আশে। রবিবার (১৭ নভেম্বর) সকালে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলা পরিষদের প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয়ের খোলা জ্বানালার এক পাশে বাসা বেঁধে এক জোড়া ঘুঘু বসবাস শুরু করেছে, ডিমও দিয়েছে বংশ বিস্তারের জন্য।
সড়জমিনে দেখা যায়, দীর্ঘদিন থেকে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার অফিসের একটি জানালা খুলা। সেই খুলা জানালায় বাসা বাঁধে ঘুঘু পাখি। একটি ঘুঘু বাসায় দেখা গেলেও অন্য পাখিকে কৃষ্ণচুড়া গাছে বসে থাকতে দেখা যায়।
বাসা বাঁধার মৌসুম ছাড়া সাধারণত ঝাঁকে থাকতে পছন্দ করে ঘুঘু পাখি। ঝােপঝাড়, গাছের ডাল, উচু বা নিচুতে পছন্দসই জায়গা পেলেই বাসা করে। নিরাপদ আশ্রয়স্থল হিসেবে উপজেলা পরিষদের প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয়ের জ্বানালা বেছে নিয়েছে যুগল পাখি।
ওই অফিসের নৈশ প্রহরী পারভেজ বলেন, অফিসে স্যারের কক্ষের সামনে ছোট্ট গাছে এক জোড়া ঘুঘু পাখি বাসা বেঁধেছে। দুইটি ডিমও দিয়েছে। খুব কাছে থেকে ঘুঘুর বাসা দেখলাম, চোখ জুড়িয়ে যায়। ঘুঘুর বাসাটি খেয়াল রাখছি। শিকারী বা শিশু-কিশোররা যেন ক্ষতি করতে না পারে।’
পরিবেশবাদী ও স্থানীয় শিক্ষক মনজুর আহমেদ আজাদ মান্না জানান, ‘শীত শুরুতেই প্রতি বছরের ন্যায় এবারও নাম না জানা হাজারো রঙ-বেরঙের অতিথি পাখির কলকাকলীতে প্রাণবন্ত হয়ে উঠছে কমলগঞ্জের পাহার টিলা, হাওর-বাওর, খাল-বিল, নদী, লেক, পুকুর, জলাশয় ও জলাশয়গুলো। কিন্তু একশ্রেণির লোভী মানুষ এলাকার বিভিন্ন খাল-বিলে নানাভাবে পাখি শিকার করে স্থানীয় হাট-বাজারে বিক্রি করছে। এদের থাবা থেকে আমাদের জীববৈচিত্র্য টিকে রাখার জন্য পাখি বাঁচানো জরুরী। প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষায় অতিথি পাখি শিকার বন্ধে সামাজিক আন্দোলন আজ বেশি প্রয়োজন। কঠোর আইন থাকা সত্ত্বেও আইন প্রয়োগকারী সংস্থা তা প্রয়োগ করছে না।’
এ প্রসঙ্গে কমলগঞ্জ জীব বৈচিত্র কক্ষা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও পরিবেশবাদী আহাদ মিয়া বলেন, ‘দুই বছর আগেও ঘুঘু পাখি চোখে পড়তো না। বর্তমানে তিলা ঘুঘু অনেক বেড়েছে। তিলা ঘুঘুর পালকের রঙ বুকের নিচে ধূসর, পিঠ বাদামি, গলায় কালোর মধ্যে সাদা ফোঁটা ফোঁটা। ঠোঁট বাদামি। পাখির উপযুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করা গেলে অন্যান্য প্রজাতির ঘুঘু পাখির দেখা মিলবে আমাদের অঞ্চলে।
এছাড়াও তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘কমলগঞ্জ উপজেলার আদমপুর, ইসলামপুর, মাধবপুর এলাকার শিখারিরা প্রায় সময় ফাঁদ পেতে এই ঘুঘু পাখি ছাড়াও বিভিন্ন প্রজাতির পাখি শিকার করে থাকে। বনপ্রাণী বিভাগ প্রায় সময় অভিযান চালায়। তবে সচেতনতার প্রয়োজন। শীত এলেই এক শ্রেণির অসাধু মানুষ হত্যা করছে এই পরিযায়ী পাখিগুলোকে।’