সিনিয়র রিপোর্টারঃ মোহাম্মাদ তারিক উদ্দিন ,
বিশেষ প্রতিবেদন:
বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ নদী যমুনার উপর দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে চলমান রেল সংযোগের এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হতে যাচ্ছে। সদ্য নির্মিত যমুনা রেল সেতু চালু হওয়ার পর, পুরনো যমুনা বহুমুখী সেতুর উপর দিয়ে রেল চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে এবং রেললাইন উঠিয়ে নেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে।⸻নতুন রেলসেতুর বিশদ বিবরণনতুন যমুনা রেল সেতুটি সরাসরি পূর্ব-পশ্চিমাঞ্চলের মধ্যে উচ্চগতির রেল যোগাযোগ নিশ্চিত করবে।• সেতুর নাম: যমুনা রেল সেতু• দৈর্ঘ্য: ৪.৮ কিলোমিটার• স্ট্যান্ডার্ড গেজ ও মিটার গেজ উভয় লাইনের ব্যবস্থা• নির্মাণ ব্যয়: প্রায় ১৬,৭৮০ কোটি টাকা• সহযোগিতায়: জাইকা (JICA)• উদ্বোধন: আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ও ট্রায়াল রান শেষ, পুরোপুরি রেল চলাচল চালু ২০২৫ সালের মে মাস থেকে⸻পুরনো যমুনা বহুমুখী সেতুতে রেল চলাচল বন্ধের কারণ ও প্রভাব• ১৯৯৮ সালে নির্মিত যমুনা বহুমুখী সেতুতে মূলত যানবাহন ও ট্রেন উভয় চলাচলের ব্যবস্থা ছিল।• ২০২৫ সালের জুনে বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা দেয় যে, নতুন রেল সেতু চালু হওয়ায় পুরনো সেতু দিয়ে আর ট্রেন চলবে না।• রেললাইন অপসারণের কাজ শুরু হয়েছে ২৫ জুন ২০২৫ থেকে, যা চলবে ধাপে ধাপে।• সেতুর উপরিভাগে অতিরিক্ত চাপ এবং বয়সজনিত কারণে রেল চলাচল বন্ধ করাকে নিরাপত্তার স্বার্থে অত্যন্ত জরুরি সিদ্ধান্ত বলা হয়েছে।⸻জনগণের প্রতিক্রিয়া ও বিতর্কসমর্থনকারীদের যুক্তি:• নতুন রেলসেতুর মাধ্যমে ট্রেনের গতি, নিরাপত্তা ও সময় বাঁচবে।• পুরনো সেতুতে ভারী ট্রেন চলাচলের ঝুঁকি কমানো হয়েছে।• যাত্রী ও মালবাহী ট্রেন আলাদা ট্র্যাক ব্যবস্থায় চলবে, ফলে জ্যাম ও বিলম্ব হ্রাস পাবে।সমালোচকদের যুক্তি:• পুরনো সেতুতে রেল ও সড়ক উভয় চলাচল চালু থাকায় তা ছিল কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ।• ট্রেন চলাচল বন্ধ হওয়ায় কিছু এলাকাবাসীর মধ্যে ভ্রমণ জটিলতা ও উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে।• রেললাইন অপসারণের পর সেতুর গঠন ও ভারসাম্য ঠিক থাকবে কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে।⸻বিশেষজ্ঞ মতামত:“যমুনা রেল সেতু দেশের রেল অবকাঠামোর এক ঐতিহাসিক উন্নয়ন। তবে পুরনো সেতুর বিকল্প ব্যবহারের পথ খোলা রাখা উচিত, যাতে জরুরি সময় বা কারিগরি সমস্যায় পূর্ব-পশ্চিম রেল যোগাযোগ ব্যাহত না হয়।”⸻উপসংহারযমুনা নদীর উপর নতুন রেল সেতুর বাস্তবায়ন নিঃসন্দেহে দেশের রেল যোগাযোগ ব্যবস্থার জন্য একটি যুগান্তকারী অগ্রগতি। তবে পুরনো সেতুর উপর থেকে রেললাইন তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত জনমনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরি করেছে। একদিকে উন্নয়ন, অন্যদিকে নিরাপত্তা ও সুযোগের সঠিক ভারসাম্য বজায় রাখা সময়ের দাবি।