চলছে আমের ভরা মৌসুম

মতামত

মোহাম্মাদ তারিক উদ্দিন-সিনিয়র রিপোর্টার: এখন চলছে আমের ভরা মৌসুম। আমের কথা আসলেই আমাদের মনে ভেসে ওঠে যে জেলার নাম তা হলো রাজশাহী ।

রাজশাহীর আম শিল্প শুধু বাংলাদেশের নয়, বরং দক্ষিণ এশিয়ার এক গুরুত্বপূর্ণ ফলভিত্তিক শিল্প। এটি রাজশাহীর অর্থনীতি, সংস্কৃতি এবং কৃষিভিত্তিক জীবনধারার একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। রাজশাহীর জলবায়ু ও মাটির গুণাগুণ আম চাষের জন্য অত্যন্ত উপযোগী।গ্রীষ্মকালে প্রচুর রোদ, কম বৃষ্টি এবং নদীভিত্তিক পলিমাটি — এই তিনটি উপাদান আমের মান ও স্বাদের জন্য উপযোগী পরিবেশ সৃষ্টি করে। তবে রাজশাহী ছাড়াও দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে আমের ফলন হয়ে থাকে ।

বিখ্যাত আমের জাত ল্যাংড়া – রসালো ও সুমিষ্ট, হিমসাগর – আঁশবিহীন খুবই জনপ্রিয়, ফজলি – আকারে বড় স্বাদে টক-মিষ্টি। আম্রপালি – হাইব্রিড জাত সংরক্ষণযোগ্যতা ভালো, খিরসাপাত (সিন্ধুরা) – টক-মিষ্টি এবং দেখতে সুন্দর।
রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নওগাঁ, নাটোর—এই অঞ্চলগুলোতে লাখ লাখ আম গাছ রয়েছে। মার্চ-এপ্রিল মাসে আমে মুকুল আসে। মে-জুলাই মাসে আম সংগ্রহ করা হয়।বর্তমানে গুটি জাতের আমের পাশাপাশি কলমজাত উন্নত মানের আমও ব্যাপক হারে চাষ হচ্ছে।

রাজশাহীর আম দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ হয়। ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, খুলনা—সব জায়গায় রাজশাহীর আমের চাহিদা বেশি। তাছাড়া এখন বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে রাজশাহীর আম যেমন – ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্য ও মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুরসহ বেশ কিছু দেশ।

বাংলাদেশ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (DAE) ও আম রপ্তানি সংস্থা (BAPA) এর মাধ্যমে নিরাপদ ও গ্যাপ (GAP)-সনদপ্রাপ্ত আম রপ্তানি করা হচ্ছে।

অতীতে ফরমালিন ব্যবহারের অভিযোগ থাকলেও বর্তমানে গ্যাস চেম্বার ও হট ওয়াটার ট্রিটমেন্ট ব্যবহার করে নিরাপদ আম প্রস্তুত করা হচ্ছে।

ক্যুইন্স, রুরাল ডেভেলপমেন্ট একাডেমি (RDA), BARI প্রভৃতি প্রতিষ্ঠান আধুনিক চাষ পদ্ধতির প্রচার করছে।
শুধুমাত্র রাজশাহীর আম বাজার ঘিরে প্রতি মৌসুমে শত কোটি টাকার বাণিজ্য হয়। এই শিল্পে লক্ষাধিক চাষি, শ্রমিক, পরিবহনকর্মী ও ব্যবসায়ী জড়িত।
আম থেকে তৈরি হয় নানা ধরনের খাদ্যপণ্য: জ্যাম, জেলি, শুকনো আম (dried mango), আমসত্ত্ব ইত্যাদি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *