গৌরনদী, প্রতিনিধি: পাঁচ বছরের শিশু সাফওয়ান সিকদারকে হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃত আসামীদের বসতঘরে অগ্নি সংযোগ করে পুড়িয়ে দিয়েছে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী।খবরপেয়ে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা আগুন নিয়ন্ত্রণ করতে গেলে এলাকাবাসীর তোপের মুখে পরেছেন। ঘটনাটি বরিশালের গৌরনদী উপজেলার মধ্য হোসনাবাদ গ্রামের।গৌরনদী ফায়ার সার্ভিসের ষ্টেশন অফিসার বিপুল হোসেন জানান, শুক্রবার বিকেল সোয়া চারটার দিকে অগ্নিকান্ডের খবরপেয়ে ঘটনাস্থলে যাই। এসময় উত্তেজিত জনতা অগ্নি নির্বাপনে ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের বাঁধা প্রদান করে। পরে গৌরনদী উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবু আবদুল্লাহ খান সহ বিভিন্ন আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে উত্তেজিত জনতাকে শান্ত করার চেষ্টা চালায়। প্রায় একঘন্টা পর বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে আগুন নির্বাপনে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যদের সহায়তা করার জন্য এলাকাবাসীকে অনুরোধ করেন নিহত শিশুর পিতা ইমরান হোসাইন ও দাদা বারেক সিকদার। তাদের অনুরোধে এলাকাবাসী সরে গেলে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার কাজ শুরু করা হয়। রাত সাড়ে আটটার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণ এবং রাত সাড়ে দশটায় ডাম্পিংয়ের কাজ শেষ করা হয়। ষ্টেশন অফিসার বিপুল হোসেন আরও বলেন, আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার আগেই দুইটি দালান ও তিনটি টিনের ঘর সম্পূর্ন পুড়ে যায়। এতে কমপক্ষে অর্ধকোটির টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।গৌরনদী মডেল থানার ওসি মো. ইউনুস মিয়া জানান, শুক্রবার বিকেলে নিহত শিশুর লাশ হাসপাতাল মর্গ থেকে এলাকায় নিয়ে আসলে জানাজা শেষে উত্তেজনা ছড়িয়ে পরে। বিক্ষুব্ধ জনতা আসামীদের বসতঘরে আগুন লাগিয়ে দেয়। খবরপেয়ে পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও অন্যান্য বাহিনীর যৌথ প্রচেষ্ঠায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। তিনি আরও বলেন, নিহত শিশুর পিতা বাদী হয়ে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। মামলার চারজন আসামীকে গ্রেপ্তার করে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। বাকী আসামীদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে।উল্লেখ্য, গত বুধবার দুপুর দুইটার দিকে স্থানীয় শিশুদের সাথে খেলতে গিয়ে নিখোঁজ হয় মধ্য হোসনাবাদ গ্রামের ইমরান সিকদারের পাঁচ বছরের ছেলে শিশু সাফওয়ান সিকদার। পরবর্তীতে অনেক খোঁজাখুঁজি করে তাকে না পেয়ে রাতেই গৌরনদী মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেন সাফওয়ানের দাদা বারেক শিকদার। বৃহস্পতিবার ভোর ছয়টার দিকে স্থানীয় মান্না বেপারীর বিল্ডিংয়ের পিছনের একটি জমির মধ্যে শিশু সাফওয়ানের রক্তাক্ত লাশ দেখতে পেয়ে এলাকাবাসী পুলিশকে খবর দেয়। পরে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে মর্গে প্রেরণ করেন। ওইদিন ঘটনার সাথে জড়িত থাকার সন্দেহে নিহতের প্রতিবেশী রোমান চৌধুরী, ইউপি সদস্য মোজাম্মেল হক চৌধুরী, রোমানের স্ত্রী আখি বেগম ও বোন রাবিনা বেগমকে গ্রেপ্তার আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ।