
এম এ কাদির চৌধুরী ফারহান :
অতিবৃষ্টির পর দফায় দফায় বন্যায় পঁচে নষ্ট হয়ে যায় মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে কৃষকের স্বপ্নের আমন ক্ষেত। কৃষকেরা বিভিন্ন জায়গা থেকে আমন ধানের চারা দ্বিগুণ দামে ক্রয় করে পূনরায় রোপণ করে ঘুরে দাঁড়ানো চেষ্টা করছেন
তবে সম্প্রতি গত কয়েকদিনের খরায় আমন ধানের জমি ফেটে চৌচির হয়ে গেছে। এতে করে আমন চাষিদের কপাল পড়ছে নতুন করে চিন্তার ভাজ। শুধু ধান খেতই না, তীব্র খরায় পুড়ছে আগাম জাতের শীতকালীন সবজী।
জেলার কৃষকেরা জানান, সম্প্রতি বন্যায় আমাদের আমন ফসল পঁচে নষ্ট হয়ে যায়। অনেক কৃষক দ্বিগুণ দামে আবার চারা পূনরায় রোপন করেন। তবে গত কয়েকদিনের তীব্র গরমে রোপন কৃত জমি শুকিয়ে চৌচির হয়ে গেছে। বৃষ্টি না হলে এসব জমির আমন ধান নষ্ট হয়ে যাবে। এতে করে কৃষক এ মৌসুমে দুই বার ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। যারা ঋণের ওপর ঋণ করে চারা কিনে আমন রোপণ করেছিলেন সেসব কৃষক এখন দিশাহারা হয়ে পড়েছেন। কিছু কিছু জায়গায় কৃষকেরা সেচ দিয়ে পানি দিচ্ছেন জমিনে।
জেলার কমলগঞ্জ, রাজনগর ও কুলাউড়া উপজেলা সরেজমিনে দেখা যায়, বন্যায় রোপণ কৃত আমনের চারা নষ্ট হওয়ার পর কৃষকরা নতুন করে দ্বিগুণ দামে চারা কিনে রোপণ করেন।
গত ৩ সপ্তাহ ধরে বৃষ্টি না হওয়ায় তীব্র গরমে আমনের জমি ফেটে গেছে। এতে করে রোপণ কৃত আমন ধানের চারা নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যদি এক সপ্তাহের মধ্যে বৃষ্টি বা সেচ দেওয়া না হয় তাহলে কৃষকেরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। এছাড়া খরার প্রভাব শীতকালীন সবজীসহ বিভিন্ন ফসল নষ্ট হচ্ছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সুত্রে জানা যায়, চলতি বন্যায় ৪০হাজার ৪৮২ হেক্টর জমির আমনফসল তলিয়ে যায়। বন্যার পানি কমার পর জেলায় ১৪ হাজার ৫৫১ হেক্টর আমন ফসল পঁচে নষ্ট হয়ে গেছে। বন্যা পরবর্তী সময়ে কৃষকরা বিভিন্ন জায়গা থেকে ধানের চারা সংগ্রহ করে রোপণ করছেন। বর্তমানে জেলায় ১ লাখ ১ হাজার হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষ করা হয়েছে। বৃষ্টি না হওয়ায় পানির অভাবে অনেক জমি শুকিয়ে গেছে। এসব জমিতে সেচ না দিলে চারা নষ্ট হয়ে যাবে।
কমলগঞ্জ উপজেলার কৃষক আনোয়ার খান বলেন, একর প্রতি ১০ থেকে ১১ হাজার টাকা খরচ করে আমরা আমন ধানের চারা রোপণ করছি। বন্যায় ধানের চারা পচেঁ নষ্ট হওয়ায় নতুন করে বিভিন্ন জায়গা থেকে দ্বিগুণ দামে এনে চারা রোপণ করছি। সব মিলে প্রতি একর জমিতে ২২ থেকে ২৩ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এখন বৃষ্টি না হওয়ায় জমি শুকিয়ে আবার ধান গাছ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এবছর প্রতি কৃষক এক মৌসুমে ২ বার ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
মৌলভীবাজার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক সামছুদ্দিন আহমেদ বলেন, তীব্র গরমে অনেক আমন ফসলের মাঠ শুকিয়ে গেছে। ধানের চারা রক্ষার জন্য সেচ দিয়ে পানি দিতে হচ্ছে। আমরা কৃষকদেরকে বলে দিয়েছি পিও ভিট ও এমওপি সার ব্যবহার করার জন্য। তাহলে কিছুটা খরতাপ থেকে ফসল রক্ষা পাবে।