কমলগঞ্জে মণিপুরি ভাষা দিবস পালিত

জাতীয় দেশজুড়ে

এম এ কাদির চৌধুরী ফারহান :
“ইমালোন ঙাঙসি, ইমালোন ইসি, ইমালোন নুংশিসি” এই শ্লোগান নিয়ে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে মণিপুরি ভাষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থার উদ্যোগে মণিপুরী ভাষা দিবস-২০২৪ উদযাপিত হয়েছে। এ উপলক্ষ্যে আলোচনা সভা ও মণিপুরী ভাষা প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের মধ্যে শিক্ষা উপকরণ বিতরণ করা হয়েছে।

দিবসটি উপলক্ষ্যে শুক্রবার (৩০ আগস্ট) বিকাল ২টায় উপজেলার আদমপুর ইউনিয়নের নয়াপত্তন গ্রামস্থ মণিপুরী কালচারাল একাডেমিতে আয়োজিত অনুষ্ঠানে মণিপুরি ভাষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থার সভাপতি কবি এ, কে, শেরামের সভাপতিত্বে ও কে এইচ সমেন্দ্র সিংহ এর সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় সম্মানিত অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ মনিপুরী কাং ফেডারেশন এর উপদেষ্টা সাবেক ইউপি সদস্য কে মনীন্দ্র কুমার সিংহ, বাংলাদেশ মণিপুরি সাহিত্য সংসদ, কমলগঞ্জ উপজেলা শাখার সভাপতি মাইবম বীরেন্দ্র, কমলগঞ্জ প্রেসক্লাবের আহ্বায়ক এম এ ওয়াহিদ রুলু প্রমুখ।

অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ মণিপুরী ইয়ুথ ফোরামের প্রেসিডেন্ট সুশীল সিংহ, সাংবাদিক সালাউদ্দিন শুভ, সমাজকর্মী নৃপেন্দ্র সিংহ, ইমা বাংলাদেশের জেনারেল সেক্রেটারি ও দি ভানুবিল ড্রামা পার্টির ডিরেক্টর লৈচোম্বম রাজকুমার, সহকারী প্রাথমিক শিক্ষক কন্থৌজম শিল্পী।

আলোচনা পর্বের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন, মণিপুরি ভাষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থার সাধারণ সম্পাদক ইবুংহাল শ্যামল।

আলোচনা চলাকালে কবিতা পাঠ করেন, কবি রওশন আরা বাসী ও কবি কেইনাহন দেবী।

সভায় বক্তারা বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে মণিপুরি ভাষার মতো সুপ্রাচীন ঐতিহ্যের একটি উন্নত ভাষাকে দ্রুত সাংবিধানিক এবং প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেয়া প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেন এবং দ্রুততম সময়ের মধ্যে নিজস্ব লিপিতে লেখা মণিপুরি ভাষায় প্রাথমিক পর্যায়ে শিশুদের শিক্ষাদানের কার্যক্রম শুরু করার আহবান জানানো হয়। তাছাড়া অনেক ক্ষেত্রে মণিপুরি ভাষা ভিন্ন নাম-পরিচয়ে উপস্থাপিত হচ্ছে উল্লেখ করে বক্তারা সরকারি-বেসরকারি সকল পর্যায়েই মণিপুরি ভাষাকে তার প্রকৃত পরিচয়ে উপস্থাপনের আহবান জানান।

আলোচনা সভা শেষে মণিপুরী ভাষা প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থীকে শিক্ষা উপকরণ বিতরণ করা হয়।

উল্লেখ্য, মণিপুরি জাতির মাতৃভাষার নাম ‘মণিপুরি ভাষা’। এই ভাষা সেই প্রাচীনকাল থেকেই মণিপুরি জাতির মূলভূমি ভারতের অন্যতম রাজ্য মণিপুরের সরকারি ভাষা এবং এই ভাষায় সেখানে শিক্ষামাধ্যমের সর্বোচ্চ পর্যায় পর্যন্ত পাঠদান করা হয়। মণিপুরি ভাষা ও সাহিত্যের রয়েছে কয়েকহাজার বৎসরের সুপ্রাচীন ইতিহাস ও ঐতিহ্য। ভারতে মণিপুরি ভাষাভাষীদের দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামের ফলশ্রুতিতে ১৯৯২ সালের ২০ আগস্ট ভারত সরকার সংবিধানের অষ্টম তপশীলে অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে মণিপুরি ভাষাকে ভারতের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় ভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। তাই সারা বিশ্বের মণিপুরি ভাষাভাষী জনগোষ্ঠী এই দিনটিকে ‘ মণিপুরি ভাষা দিবস’ হিসেবে পালন করে থাকেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *