হরিজন সম্প্রদায়ের হামলার প্রতিবাদে ১৩ জুলাই দেশব্যাপী বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল।

ধর্ম

সুদীপ দেবনাথ(রিমন সূর্য)
হরিজন সম্প্রদায়ের বসতি বংশালের মিরনজিল্লা পল্লীতে হামলার প্রতিবাদে ১৩ জুলাই দেশব্যাপী বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিলের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ ও হরিজন ঐক্য পরিষদ।

বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বাংলাদেশ যুব ঐক্য পরিষদের মানববন্ধনে অংশ নিয়ে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্ত এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।এর আগে গতকাল বুধবার মিরনজিল্লার বাসিন্দাদের ওপর ৩৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আউয়াল হামলা চালায়। এতে অর্ধশত মানুষ আহত হন। এ ঘটনার প্রতিবাদে মানববন্ধনের ডাক দেওয়া হয়।

দেশব্যাপী ধর্মীয় জাতিগত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর চলমান হামলা, ভূমি দখল, দেবোত্তর সম্পত্তি দখল ও মিরনজিল্লা কলনিতে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের উচ্ছেদ অভিযান এবং এসময় স্থানীয় কাউন্সিলরের নেতৃত্বে ন্যাক্কারজনক হামলা ও ভাঙচুরের প্রতিবাদে মানববন্ধনে তিনি এই ঘোষণা দেন।

রানা দাস গুপ্ত বলেন, বাংলাদেশের সব নাগরিকের অধিকার সমান, সংবিধানের ১৯ অনুচ্ছেদে সব নাগরিককে সম-অধিকার দেয়া হয়েছে। একটি স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীর মদদে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন জোর করে, হামলা চালিয়ে মিরনজিল্লার অধিবাসীদের উচ্ছেদ করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। হাইকোর্টে রিট আবেদন দায়ের করা হয়েছে। এরপর ও গতকাল সিটি করপোরেশনের ৩৩ নং ওয়ার্ডের স্থানীয় কাউন্সিলর আউয়াল হোসেনের নেতৃত্বে দুষ্কৃতকারীরা মিরনজিল্লার হরিজন কলোনীতে যে হামলা চালিয়েছে এর তীব্র নিন্দা জানাই।

মিরনজিল্লার অধিবাসীদের অধিকার রক্ষায় একাত্মতা ঘোষণা করে এসময় আরও বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজল দেবনাথ ও মিলন কুমার দত্ত, সংগ্রামী যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মনিন্দ্র কুমার নাথ, এডভোকেট কিশোর কুমার মন্ডল, পদ্মাবতী দেবী ও বাংলাদেশ যুব ঐক্য পরিষদের সভাপতি শিমুল সাহা, সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার তাপস কান্তি বল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিল্লোল বিশ্বাস এবং দীপন বণিক আকাশ প্রমুখ।এসময় মানবাধিকার কর্মী সীমা দত্ত বলেন, ৪০০ বছর আগে হরিজনদের পূর্বপুরুষদের ভারত থেকে এই অঞ্চলে পরিচ্ছন্নতা কাজের জন্য আনা হয়। বর্তমানে সাত শতাধিক পরিবার এই মিরনজিল্লা হরিজন কলোনিতে গাদাগাদি করে বসবাস করছে। তাদের মধ্যে পাঁচ শতাধিক পরিবারের সদস্য সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতা কাজে নিয়োজিত। বাদবাকি দুই শতাধিক পরিবারের সদস্যের সবাই কোনো না কোনো সময়ে সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতা কাজে নিয়োজিত ছিলেন। তাদের অনেকেই মারা গেছেন। কেউ বা চাকরিচ্যুত হয়েছেন। এমন বাস্তবতায় অবৈধ বলে সিটি করপোরেশনে কর্মরতদের বাইরে অন্যদের উচ্ছেদ করলে তাদের পথে নামতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *