মাহফুজুর রহমান মাসুম বরিশাল থেকে ঃ
বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার বাগধা ইউনিয়নের দক্ষিণ চাঁদত্রিশিরা গ্রামের এক মাদ্রাসার ছাত্রী (১৩) কে বাবা-মা ও দুলাভাই মিলে বাল্যবিয়ে দেয় তিনমাস পূর্বে। ওই ছাত্রী বাবার বাড়ি বেড়াতে আসার পরে সে স্বামীর বাড়ী যেতেনা চাইলে বাবা-মা ও দুলাভাই মিলে লোহার শিকলে হাত-পা বেঁধে ঘরের দরজা বন্ধকরে অমানবিক নির্যাতন চালায় এমন অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সাংবাদিকদের কাছে নির্যাতন করার কথা স্বিকার করলে ছাত্রী পিতা ও নির্যাতিতা ছাত্রী।
স্থানীয় ও পরিবার সূত্রে জানা গেছে, আগৈলঝাড়ায় বাগধা ইউনিয়নের দক্ষিণ চাঁদত্রিশিরা গ্রামের মো.জামাল হাওলাদারে মাদ্রাসা পড়ুয়া ছাত্রী মোসাম্মৎ হাবিবা (১৩ কে একই উপজেলার রাজিহার ইউনিয়নের রাংতা গ্রামের সাবেক প্রধান শিক্ষক মো.শাহজাহান মোল্লার ছেলে মো. সাজিদ মোল্লার সাথে তিন মাস পূর্বে বাল্যবিয়ে দেয়। বিয়ের পরে দুইমাস স্বামী সংসারে থাকার পরে একমাস পূর্বে হাবিবা পিতারবাড়ি বেড়াতে আসেন। পিতার বাড়ি আসা পরে হাবিবা আর স্বামীর বাড়ি যাবেনা বলে পিতার পরিবারকে জানায়। এর পরে গত তিন দিন ধরে লোহার শিকলে হাত-পা বেঁধে রাখে। গত শনিবার রাতে পিতা মো. জামাল হাওলাদার, মা মারুফা বেগম ও দুলাভাই আল-আমীন আকন মিলে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় নির্যাতন চালায়।
স্থানীয় একাধীক ব্যক্তি নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বলেন, হাবিবাকে বাল্যবিয়েদেয়। সে স্বামীর বাড়ি যেতে না চাইলে তাকে পিতা, মা ও দুলাভাই মিলে হাত-পা বেঁধে ঝুলিয়ে নির্যাতন চালায়। হাবিবা বাচাও বাচও বলে ডাকচিৎকার করলে আমরা শুনে অসলেও আমাদের কাছে জেতে দেয়নি।
নির্যাতিতা মোসাম্মৎ হাবিবা সাংবাদিকদের বলেন, আমি উপজেলার বাগধা মাদ্রাসায় ৫ম শ্রণীতে পড়া সুনা করতাম। তিন মাস আগে আমার পিতা- মা ও বড় দুলাভাই মিলে আমারে বিয়েদেয়। আমি এখন লেখা পড়া করতে চাই। আমি সংসার করতে চাইনা। আমি স্বামীর বাড়ি যাবোনা বলে আমাকে পিতা, মা ও দুলাভাই মিলে তিনিদিন লোহার শিকল দিয়ে হাত-পা বেঁধে ঘরে বন্ধিকরেরাখে। এরপরে গতকাল শনিবার রাতে ঘরে দরজা বন্ধ করে হাপা বাঁধা অসস্থায় ঝুলিয়ে পিটায়। আমি বাঁচাও বাঁচাও বলে চিৎকার করলে এলাকাবাসী আসলে তাদের ঘরে ঢুকতে দেয়নাই। আমি এখন লেখা পড়া করতে চাই। স্যার আপনারা আমাকে লেখা পড়ার ব্যবস্থাকরুন। আমি সংসার করতে চাইনা।
এব্যাপারে জামাল হাওলাদার বলেন, আমার মেয়েকে বল্যবিয়ে দিয়েছি এাঁ সত্য। এখন স্বামীর বাড়ি জাবেনা বলে মেয়ের মা তাকে মারধর করছে তা সত্য। আমি তাকে মারধর করি নাই।
এব্যাপারে অভিযুক্ত মা মারুফা বেগম বলেন, আমার মেয়ে তার স্বামীর সংসারে যাবেনা বলে তাকে স্বাশন করা হয়েছে। তাকে লোহার শিকল দিয়ে হাত-পা বাঁধা হয়েছে একথাও সত্য।
এব্যাপারে বাগধা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়াম্যান আমিনুল ইসলাম বাবুল ভাট্টি বলেন, আমি বিষয়টি জানতে চেয়ে প্রশামনকে জানিয়ছি। বিষয়টি অন্যায় অপবাধ। আমি অপরাধির বিচার দাবিকরছি।
এব্যাপারে আগৈলঝাড়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (ওসি তদন্ত) মো. জহিরুল ইসলাম জানান, স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে এসআই মাহফুজ হোসেনকে পাঠিয়েছিলাম। তারা পুলিশের টেরপেয়ে নির্যাতিতা হাবিবাকে নিয়ে পালিয়ে যায়। তাকে উদ্ধারের চেষ্টাচলছে। উদ্ধারের পারে আইনানুক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফারিহা তানজিন বলেন, বিষয়টি আইননত দন্ডনিয় অপরাধ। বিষয়টি খোজ খবর নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।