নাজিরপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা সেবার অবহেলায় রোগী মৃত্যুর অভিযোগ

স্বাস্থ্য

ওয়ালিউল্লাহ রাইসুল; নাজিরপুর (পিরোজপুর) সংবাদদাতা;

পিরোজপুর জেলার নাজিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা সেবার অবহেলায় তানভীর শেখ (২২) নামের এক রোগীর মৃত্যু হয়েছে। ২৪ মে (শুক্রবার) বিকেলে উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এঘটনা ঘটে। মৃত্যু রোগী উপজেলার সদর ইউনিয়নের পাতিলাখালী গ্রামের বাসিন্দা আব্বাস আলী শেখের পুত্র।

মৃতের চাচাত ভাই মো: চঞ্চল শেখ জানান, গত ২৩ মে বিকাল ৩ ঘটিকায় তার চাচাত ভাই তানভীর শেখ একজন মানসিক প্রতিবন্ধি। তাকে ডায়েরীয়া জনিত কারনে নাজিরপুর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ডাক্তার সেবাপত্র অনুযায়ী চিকিৎসা করলে রোগী কিছুটা উন্নতি হলেও ২৪ মে দুপুরের দিকে তার শারিরীক অবনতি হয়, তখন রোগীর স্বজন’রা বার বার কর্তব্যরত সেবিকা শ্যামলী রানীকে অবহিত করলেও তিনি তাতে কোন গুরুত্ব না দিয়ে তাড়িয়ে দেন এবং কালক্ষেপন করেন। এদিকে ওই ওয়ার্ডের ভর্তিকৃত একাধীক রোগী ও স্বজন’রা অভিযোগ করে বলেন, এ হাসপাতালে কোন চিকিৎসা সেবা পাওয়া যায় না, নার্স এবং ডাক্তারা আমাদের অবহেলা করে। এছাড়া আরো অনেক প্রতক্ষদশীরা জানান, ওই কর্তব্যরত নার্স শ্যামলীর তার বাসায় মিনি ক্লিনিক সৃস্টি করে হাসপাতাল থেকে রেগী ভাগিয়ে নিয়ে বাসায় বসে ডেলীভেরী ও ডিএনসি করান।

এব্যাপারে সিনিয়র স্টাফ নার্স শ্যামলী রানী জানান, রোগীর অবস্থা খুব খারাপ ছিল আমি বর্তব্যরত ডাক্তার মুনিয়া জামানকে অবহিত করেছি। এছাড়া অন্যদের অভিযোগের কথা জানতে চাইলে তিনি কোন সদোত্তর দিতে পারেন’নি এবং নিউজ করতে নিষেধ করেন।

এবিষয়ে ডাক্তার মুনিয়া জামান জানান, আমি রোগীকে উপযুক্ত সেবাপত্র দিয়েছি, সেবাপত্র অনুযায়ী চিকিৎস্যা হয়েছে তাতে কোন ত্রæটি হয় নাই, নার্সদের অবহেলা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি এবিষয়ে কোন কথা বলেননি।

এবিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: মো: মশিউর রহমান এর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ সংবাদকর্মীদের জানান, আমি ঘটনাটি শুনেছি, সিভিল সার্জন মহোদয়কে জানিয়েছি, তবে অভিযোগকারীদের অভিযোগ আমি খতিয়ে দেখব, তদন্ত কমিটি গঠন করব, তাদের অবহেলার ঘটনা যদি সত্য হয় তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করব।

হাসপাতালে উপস্থিত মৃতের স্বজন ও স্থানীয় একাধিক লোকজন জানান, হাসপাতালে সেবিকাদের সেবার মান অনেক জঘন্য। হাসপাতলের অধিকাংশ সেবিকা ১০-১৫ বছর বা তারও অধিক সময় ধরে কর্তরত আছেন, তারা স্থানীয় প্রভাবশালীদের ছায়ায় বসে খেয়াল-খুশি মত চাকুরী করেন যেন, মাস শেষে বেতন তো ঠিকই আসে। এ বিষয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প.প কর্মকর্তার নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন, সেবিকারা মূলত নার্সি অধিদপ্তরের নিয়ন্ত্রনে, তাই এ বিষয়টি আমাদের নিয়ন্ত্রনের বাহিরে। আমরা চাইলেও কিছু করতে পারি না। তবে আমি উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়টি অবহিত করব।

নাজিরপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো: জিয়াউদ্দিন জানান, আমি মৌখিক অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছি, এখন পর্যন্ত কোন লিখিত অভিযোগ পাইনি, অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *